বহুদূর, বহুদূরে চলে এসেছি,
পুরোপুরি নতুন পথে।
পিছন থেকে কেউ চেষ্টা করেছে
, ফেরাতে আমাকে।
আমি একেবারই পাত্তা দেইনি
, সকালে কেউ বাড়ি ফেরে?
দুপুরে সবকিছু আরও মোহময়,
ডুবে গিয়ে হই বেসামাল।
বিকেলে ফিসফিসে কণ্ঠের ডাক,
ফিরে তাকিয়ে বলি-পরে।
অবশেষে রাত এলো নীরবে,
দেহমন অবসন্ন।
হাত-পা, মাথা-মগজের কান্না শুনতে পাই।
হৃদপিন্ড বললো, এত জুলুম?
আমি বোবা হয়ে হারানো পথ খুঁজি।
'ক্ষমা করো' আমার শেষ ভাষা।
শিক্ষিকা একজন, বয়স ছিয়াশি বছর,
দিনে সাতাশ পদের ওষুধ খায়,
এরপরও দাঁতের ব্যথায় দিন রাত কঁকিয়ে কাঁদে।
নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারগুলো লজ্জা শরমের আবরণ সরিয়ে আত্নীয় স্বজনের কাছে
হাত পেতে সাহায্য চায়। একদম সংকোচ করে না
। একটা শহরে যুগ যুগ ধরে
মানুষ বাস করে। কিন্তু সেই শহরের ভাঙা রাস্তা ভাঙাই থাকে। হাসপাতালে
ন্যূনতম চিকিৎসা জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা সময় ব্যয় করতে হয়। নেই কোন ভালো
স্কুল।
চারদিকে এত সব সমস্যা। মনে হয় সবাইকে রূপকথার দেশে পাঠিয়ে দেই।
সময়কে একটু সময় দিলাম। ছুটে চলাকে ছুটি দিলাম। জীবন থেকে যদি অল্প সময়
সময়হীন থাকা যেত?
কেমন হতো সময়মুক্ত অল্প জীবন?
সময়কে আরও দূরে পাঠিয়ে দিলাম। ছুটে চলাকে বন্দি করলাম। জীবন থেকে যদি
বেশি সময় সময়হীন থাকা যেত?
কেমন হতো সময়মুক্ত বেশি জীবন?
সময়ের পিছনে ছুটতে ছুটতে জীবন অবসন্ন। জীবন থেকে যদি সময় শব্দটি বাদ
দেয়া যেত!
কেমন হতো সময়মুক্ত মুক্তজীবন?
সন্ধ্যা বেলা তোমার বুকে,
ঠাঁই নিয়েছে হাজার লোকে।
যাত্রা শেষে খুব সকালে,
পৌঁছে যেত নিজ আবাসে।
বরিশাল টু ঢাকার পথে,
কেবিন পেত ভি আই পিতে।
ডেকের উপর ঢালাও বেডে,
যেমন খুশি ঘুমিয়ে যেতে।
গরম ভাতে ইলিশ মাছে,
মজার স্বাদে ভাত খেতে।
ছেলে মেয়ে বুড়ো বুড়ি,
খেত মজার ঝাল মুড়ি।
নদীর বুকে বিলাশ ভ্রমণ,
কোথাও আর নেই যে এমন।
তবু কেন হায় রে হায়,
দিনগুলো সব বদলে যায়।
হাজার বছর দিলে সেবা,
আজ তোমারে দেখে কেবা!
তুমি ছিলে রাজাধি রাজ,
আজ কেন এ গরীবী সাজ?
ভাবতে গিয়ে চমকে উঠি,
সত্যি তুমি পেলে ছুটি?
সত্যি কথা বলতে কি!
শোষন তুমি কম করোনি।
সদর ঘাটের পদে পদে,
হয়রানি যে কত রূপে।
জালের মতো ছড়িয়ে আছে,
অন্তহীন সমস্যা যে।
নদীর বুকে তোমার দাপট,
মুখে কষ্ট বুকে ছটফট।
নীরব নিথর তোমার দেহ,
আপন নয় আজ যে কেহ।
কারণ তোমার অজানা নয়
সত্যিটা আজ মানতে যে হয়।
পদ্মা সেতুর নির্মাণেতে
আনন্দ আজ সবখানেতে।
কষ্ট থেকে মুক্তি পেল,
নতুন দুয়ার খুলে গেল।
দক্ষিণ বাংলার জনগণের,
স্বপ্ন পূরন হলো মনের।
অর্থনীতি এগিয়ে যাবে,
স্বনির্ভর তারা হবে।
'সোনার বাংলা' মুখে নয়,
কাজের হবে পরিচয়।
মাকে কখনো নাকফুল পরতে দেখিনি,
তার খাড়া নাকে নাকফুল পড়লে
কেমন লাগতো দেখতে?
দেখা হয়নি!
আফসোস রয়ে গেল!
বাবাকে পছন্দের বই কিনে দিয়েছি,
বেতনের টাকা কখনো হাতে দেইনি।
টাকা হাতে বাবাকে
কেমন লাগতো দেখতে?
দেখা হয়নি!
আফসোস রয়ে গেল!
বহুবার দিয়েছি পাড়ি দূরদেশ,
পরিবারহীন শুধু একা একা।
যদি বুকে থাকতো সন্তান
কেমন অনুভূতি হতো?
অনুভব করিনি!
আফসোস রয়ে গেল!
এত কিছু নামডাক
সবকিছু ভেসে যাক।
খুঁজলাম জীবনের যতগুলো ভুল আছে
মন বলে সবকিছু ঠিক আছে ঠিক আছে।কোথা যাই, কী করি,
শুধু ভেবে ভেবে মরি।
মন ডেকে বলল, আশে পাশে কত কী!
ঘরে থেকে শরীরের ক্ষতি কত জানো কী?
যেই কথা, সেই কাজ,
যেথা হোক যাব আজ।
হাসি মুখে হেঁটে চলি সাথে নিয়ে লাঠিটা
নিঃশ্বাসে বুক ভরি, পায়ে মাখি মাটিটা।
ফুল বাগে, পাখি ডাকে,
সাঁঝ নামে, ভাল লাগে।
দিন শেষে এ স্মৃতি থেকে যাক রমনায়,
ফিরে গিয়ে ভাল থাকি এই শুধু মন চায়।
সদর ঘাটে,
সকাল কাটে
ক্ষুধা পেটে।
দুপুর
রোদে,
কাজের
খোঁজে
সবাই
ছোটে।
ফেরি ওয়ালা,
কাঁধে ঝোলা
আপন ভোলা।
রিক্সা
চালায়,
ঘাম
ঝরায়
রিক্সাওয়ালা।
ঠেলা গাড়ী,
সারি সারি
মালে ভারী।
ডাকে
কুলি,
দুহাত
তুলি
মানুষগুলি।
সন্ধ্যা কালে,
ঢেউয়ের তালে
লঞ্চ চলে।
যাত্রী
সুখে,
নদীর
বুকে
লঞ্চে
উঠে।
সূর্য পাটে,
সন্ধ্যা ঢাকে,
তখন ঘাটে।
আপন
ঘরে,
কেউবা
ফেরে
সবাই
নারে।
গরীবএতিম,
বৃদ্ধ নবীন।
ঠিকানাহীন
শয্যা
পাতে,
মাটির
খাটে
সদর
ঘাটে।
মানুষ যেথায়,
কুকুর হেথায়
রাতে ঘুমায়।
সদর
ঘাটে,
জীবন
কাটে
এমন
ভাবে।
তবু মুখে,
হাসে সুখে
শান্তি বুকে।
মানুষ
ওরা,
কষ্টে
গড়া
জীবন
ধারা।
একটি অকাল মৃত্যু
অনেক কিছু বদলে দেয়।
আমরা ভীষণভাবে বদলে গেছি,
সেই এপ্রিলে।
এখন উদাস সময়
আনন্দহীন অন্তরে রক্তক্ষরণ।
হাসতে ইচ্ছে করে না,
গাইতে ভুলে গেছি।
এই এপ্রিলে।
বার মাস চলে গেছে,
সবকিছু ঠিকঠাক আছে।
ঘরের পোষা বিড়াল,
কম্পিউটার আর দেয়ালের ছবি
নিস্তব্ধ বাগান বিলাস।
বদলে যাওয়ার কারণ হয়ে,
তুমিও আছো হে এপ্রিল!
(রাতুলের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে)
রীনা পারভীন
আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম, শক্তিশালী পা নিয়ে কত হাঁটতাম।
হাসি দিয়ে খুশি দিয়ে মন মাতাইতাম,
আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম!
যৌবনকালে কাজের মধ্যে ডুবে থাকিতাম, পরিবারের সকল চাওয়া আমরা
মিটাইতাম,
এখন মোরা বৃদ্ধ হয়ে বিছানায় শুইলাম,
আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম!!
গাছের ডালে পাখির খোঁজে
স্কুল পলাইতাম,
হায়রে মধুর কিশোরকালটা কবে হারাইলাম।
আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম!!!
শিশুকালে মায়ের কোলে
মাথা রাখিতাম,
দুধে ভাতে তৃপ্তহয়ে ঘুম পড়িতাম।
আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম!!!
এখন বড় কঠিন সময়,
বিছানাটাই আপন
নড়াচড়া বারণ সবই,
এইতো এখন জীবন।
বৃদ্ধবেলা স্বজনহারা কোথায় যাইতাম,
আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম!!!